Animals of the Sundarbans (সূন্দরবনের প্রাণী)
ভূমিকাঃ-
সুন্দরবন বাংলাদেশের এক অপরূপ প্রাকৃতিক নিদর্শন। চমৎকার সব গাছপালা আর বন্য প্রাণীর সমাবেশ এই সুন্দরবন। বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা এ বনটি প্রকৃতি প্রেমিদের কাছে একটি গুরূত্বপূর্ণ স্থান।
সুন্দরবনের অবস্থানঃ-
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের কয়েকটি জেলা মিলে এই বনের অবস্থান। এই বনের কিছু অঞ্চল ভারতে এবং অধিকাংশ এলাকা বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত।
আয়তনঃ-
আজ থেকে প্রায় দুশো বছর পূর্বে মূল সুন্দরবনের আয়তন ছিল প্রায় ১৬,৭০০ বর্গ কিলোমিটার। বাংলাদেশে সুন্দরবনের বর্তমান আয়তন প্রায় ৪১১০ বর্গ কিলোমিটার। এর প্রায় ৩২,৪০০ হেক্টর এলাকাকে বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
স্তন্যপায়ী প্রাণীঃ-
সুন্দরবনের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার প্রধান। এর সাথে পৃথিবীর অন্য কোনো বাঘের তুলনা হয় না। এছাড়া এখানে রয়েছে বিভিন্ন রকমের হরিণ, সজার , ভোঁদড় এবং বন্য শূকর। একসময় সুন্দবনে চিতাবাঘ, বাঘ, গন্ডার ও হাতি ছিল। কিন্তু আজ তাদের আর কোনো অস্তিত্ব নেই।
উভচর প্রাণীঃ-
সুন্দরবনে মাত্র আট প্রজাতির উভচর প্রাণীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলোর মধ্যে সবুজ ব্যাঙ, স্কিপার ফ্রগ, ক্রিকেট ফ্রগ এবং কুনো ব্যাঙ উল্লেখযোগ্য।
সরীসৃপ প্রাণীঃ-
সুন্দরবনের সরীসৃপ প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো কুমির। এক সময় সুন্দরবনে এদের সংখ্যা ছিল অনেক। কিন্তু বর্তমানে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে এদের সংখ্যা দিনে দিনে কমে আসছে। কুমির ছাড়া গুইসাপ, কচ্ছপ, রাজগোখরা ইত্যাদি সরীসৃপ প্রাণীও রয়েছে সুন্দরবনে।
অমেরুদণ্ডী প্রাণীঃ-
সুন্দরবনের অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে মোলাস্কা ও ক্রাসটেসিয়ান গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া রয়েছে চিংড়ি, লাস্টার, কাঁকড়া, শামুক ও ঝিনুক। এগুলো অর্থনৈতিক দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
পাখিঃ-
বিচিত্র ধরনের পাখির এক অপরূপ বাসস্থান সুন্দরবন। এখানে বসবাসকারী অধিকাংশ পাখিই স্থানীয়। এখানকার নদীনালার কিনারায় বিচরণ করে বক, সারস, হাড়গিলা, লেনজাসহ অসংখ্য উপকূলীয় পাখি। বড় বড় নদীর উপকূলে দেখা যায় গাঙচিল, জল কবুতর, টার্ন ইত্যাদি। এছাড়া এ বনে রয়েছে কাঠঠোকরা, পেঁচা, বুলবুলি, ঘুঘু, মুনিয়া, টুনটুনি, দোয়েলসহ নানা জাতের পাখি।
মাছঃ-
সুন্দরবনের নদীনালা ও অন্যান্য জলাশয় গুলোতে বাস করে নানা প্রজাতির মাছ। এদের মধ্যে কিছু কিছু মাছ পানির বিভিন্ন স্তরে বসবাস করে আর কিছু পানির তলদেশে। যেমনঃ ইলিশ, কোরাল, বোয়াল, লাক্কা, ছরি, রূপচাঁদা, বাইন, চিংড়ি, টেংরা ইত্যাদি। এসব মাছ দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
উপসংহারঃ-
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক দৃশ্য আর বন্য প্রাণীর সমাবেশ পর্যটকদের মনকে আকর্ষণ করে। তাই প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ সুন্দরবনে বেড়াতে আসে। কিন্তু উপযুক্ত রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে এখানকার বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। তাই প্রয়োজনীয় আইন ও গণসচেতনতা গড়ে তোলে এসব বন্য প্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
I hope you enjoyed reading this Animals of the Sundarbans essay. You may also like “21 February Eassy | একুশে ফেব্রুয়ারী সর্ম্পকে একটি রচনা লিখ“